ল্যাপটপ ক্রয়ের পূর্বে করণীয় বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা

ল্যাপটপ ক্রয়ের পূর্বে করণীয় বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা

ল্যাপটপ আমাদের দৈনিন্দিন জীবনের অপরিহার্য ডিভাইস । কেউ প্রতি মাসে / প্রতি বছর ল্যাপটপ কিনেন না। সাধারণত গ্রাহক ২/৩ বছর পর ল্যাপটপ পরিবর্তন করে থাকেন।

তাই ল্যাপটপ কিনার পূর্বে খুব সতর্কভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। আবার অনেকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহনের অভাবে সঠিক ডিভাইস নির্বাচনে ব্যর্থ হন। ফলে নিজের ডিভাইস থেকে কাঙ্খিত পারফর্মেন্স পান না।

আমরা ইউজারদের সুবিধার্থে প্রাথমিকভাবে কিছু টিপস উপস্থাপন করবো।

১) অপারেটিং সিস্টেস (OS) :

Windows, Mac, Chrome Book সহ অনেক ধরনের অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। প্রত্যেক ইউজারের একটা নির্দিষ্ট পছন্দ রয়েছে। আবার অনেকের কাজের ধরনের উপরও বিষয়গুলো নির্ভর করে। সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত ও দামের দিকে সাশ্রয়ী হিসেবে রয়েছে Windows.

২) ল্যাপটপের সাইজ:

ল্যাপটপের স্ক্রীন সাইজ অন্যতম একটা বিষয়। আমরা কোন ধরনের কাজ করবো তার উপর নির্ভর করে। ১১-১২ ইঞ্চি থেকে ১৭-১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত স্ক্রীন সাইজ হয়ে থাকে। যদি ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করা হয় সেক্ষেত্রে একটু বড় সাইজের স্ক্রীনই ভালো। বড় সাইজের ল্যাপটপ সাধারণত একটু ভারী হয়ে থাকে। সেটাও বিবেচনায় রাখতে হবে।

আবার যদি বহনের জন্য সুবিধার কথা চিন্তা করা হয় তাহলে ছোট সাইজের স্ক্রীনের ল্যাপটপ ভালো হয়।

৩) কীবোর্ড ও টাচ প্যাড:

ল্যাপটপের কীবোর্ড ও টাচ প্যাড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ যাদের ল্যাপটপে কাজের পরিমান বেশী, বিশেষ করে প্রোগ্রামার, ডিজাইনার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর তাদের কীবোর্ড ও টাচ প্যাডের ব্যাপক ব্যবহার করতে হয়।
সেক্ষেত্রে ল্যাপটপ ব্যবহারের পূর্বে দেখতে হবে তার কীবোর্ড ও টাচপ্যাডের কোয়ালিটি কেমন এবং তা ইউজার বান্ধব কিনা।

৪) কনফিগারেশন:

ল্যাপটপের কনফিগারেশন নির্বাচন একটা অতীবগুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটা ব্যবহারকারীদের কাজের ধরনের উপর নির্ভর করে । একজন ইউজার কি ধরনের কাজ করবেন, কিধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন তার উপর ভিত্তি করেই ল্যাপটপের কনফিগারেশন নির্বাচন করতে হয়।

AMD, Pentium, Xeon  এবং  Core i3 থেকে শুরু করে Core i9  +++ প্রসেসর পাওয়া যায়। কাজের এবং সফটওয়্যার এর ধরনের উপর নির্ভর করে কোন ধরনের কনফিগারেশন দরকার।

to_do_before_buy_a_laptop

 ক) ডিজাইনারদের জন্য র‌্যাম, এস এস ডি, গ্রাফিক্স এবিষয়গুলো লক্ষণীয়।

খ) ভিডিও এডিটরদের জন্য র‌্যাম, এস এস ডি, গ্রাফিক্স এর সাথে সাথে ডিসপ্লেটাও ভালো কনফিগারেশনের হওয়া জরুরী।

গ) প্রোগ্রামার সহ একটু এডভান্স ইউজারদের জন্য  র‌্যাম, এস এস ডি এবং ভালো মানের প্রসেসর সম্পন্ন ল্যাপটপ হওয়া জরুরী।

ঘ) ডিসপ্লে এর ক্ষেত্রে কারো যদি টাচ স্ক্রীন কাজের জন্য সুবিধা হয় অথবা ব্যক্তিগত পছন্দ সেক্ষেত্রে টাচ স্ক্রীন প্রাধান্য দেয়া যেতে পারে।

ঙ) অনেকের বেশী USB Port দরকার হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে সেটা ক্রয়ের পূর্বেই চেক করে নিতে হবে। তবে USB Port  এর বেশী ব্যবহার ডিভাইসের উপর নেতিবাচক প্রভাব তৈরী করে।

চ) গেমিং ল্যাপটপের ক্ষেত্রে ভালো প্রসেসরের পাশাপাশি GPU, VRAM, SSD ইত্যাদি বিষয়গুলো লক্ষনীয়। গেমিং এর জন্য বিভিন্ন ব্র‌্যান্ডের গেমিং সিরিজের ল্যাপটপকে প্রাধান্য দেয়া উচিত।

৫) ব্যাটারী:

ল্যাপটপের ব্যাটারী ব্যাকআপ অত্যন্ত জরুরী। মিটিং এর সময়, রিমোট কাজের সময় পাওয়ার কানেকশন বা এডাপ্টার এর সমস্যা থাকলে ল্যাপটপের ব্যাকআপ দিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়া যায়। তাই ল্যাপটপ কিনার পূর্বে বেশী ব্যাটারী ব্যাকআপ সম্পন্ন ল্যাপটপকে প্রাধান্য দেয়া যেতে পারে।

তবে যারা অনডেস্কে কাজ করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে অবশ্য ব্যাকআপ কম থাকলেও সমস্যায় পড়তে হয় না।

৬) বাজেট:

ল্যাপটপের বাজেট সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আগে বাজেট নির্দিষ্ট করলে কাঙ্খিত কনফিগারেশন অনেক সময় পাওয়া নাও যেতে পারে। এক্ষেত্রে কাজের প্রয়োজন মিটাবে যে কনফিগারেশনের ল্যাপটপ তা নির্বাচন করে তারপর  বাজেট নির্ধারন করা সমীচীন।

৭) ব্র্যান্ড:

ল্যাপটপ ক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের বিষয়টা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। কারণ ব্র্যান্ডের পন্যের কোয়ালিটি এবং সাপোর্ট সব সময় ভালো হয়ে থাকে। তাই ব্র্যান্ড রিভিউ দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।

 এছাড়াও অভিজ্ঞ কোন   ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ গ্রহন করা যেতে পারে।

Leave a Reply